বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

Bengali Fim Doaansh Review: আমরা যে সুন্দরবনকে দেখে এতদিন ধরে অভ্যস্ত হয়েছি, তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছেন পরিচালক। পর্যটকের দৃষ্টি থেকে সরিয়ে এনেছেন এক নির্দিষ্ট অবস্থানে। সেখানে দাঁড়িয়ে আদুল গায়ে দেখা যায়, জলে কুমির-ডাঙায় বাঘের জীবনকে।

দোঁয়াশ ছবির একটি দৃশ্য

বিনোদন | Bengali Film Doaansh Review: কুঞ্জছায়ার সিনেমা নয়, দোআঁশ নির্দেশ করে এক নির্মম সত্যের দিকে

UB | ১০ জুলাই ২০২৪ ১৫ : ১২Uddalak Bhattacharya


উদ্দালক ভট্টাচার্য

তাহলে কী করি আমরা? সুন্দরবনের কথা বললেই কী কথা মনে পড়ে? শীতের কোনও এক মনোরম সকালে আপনি হয়ত বেড়াতে গিয়েছেন সাগরপাড়ের সোঁদরবনে। খাঁড়ি আর জংলার মাঝে গড়ে ওঠা আধুনিক রিসর্টে ঢুকেই খোঁজ করছেন, গরম জলটা ঠিক সময় পাওয়া যায় কী না, খোঁজ করছেন, দুপুরের খাবারে কাঁকড়ার ঝালের, আর জিজ্ঞাসা করছেন, বাঘ দেখতে পাবেন কী না! এই বাঙালির সুন্দরবন। কে আর পড়ছে, মানিকের লেখা হলুদ নদী, সবুজ বন! কার সময় আছে, মাছুয়াদের জীবনের দিকে তাকানোর, বা মউলির মুখোশ চাপা আতঙ্কের দিকে। তা হলেও, সুন্দরবন শুধু পর্যটন নয়, সুন্দরবন শুধু খাঁড়ি সাঁতরে যাওয়া বাঘের দিকে তাকিয়ে শহুরে বিষ্ময় প্রদর্শন নয়। সুন্দরবন আসলে মৃত্যুর সঙ্গে আদিম লড়াইয়ে থাকা এক জীবন বৃত্তান্ত। যেখানে সভ্যতা মেনে চলে আদিম নিয়ম। সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত দোআঁশ সেই পড়ে থাকা জীবনের এক জলছবি, নকশি কাঁথার মাঠ। 

সাধারণত সার্ভাইবাল বা বেঁচে থাকার লড়াই দেখানো হয়, এমন সব ছবির একটা টানটান বিষয় থাকে। মুখ্য দর্শক তাকেই টানটান গল্পের মোড়ক ভেবে সিটের গোড়ায় বসে থাকেন, আর বাইরে বেরিয়ে উত্তেজনায় ফুটতে-ফুটতে বলতে থাকেন, 'হেব্বি হয়েছে'। এই 'হেব্বি'-র লড়াইয়ে এই ছবি নেই। থাকার প্রয়োজনই নেই। কারণ, বাংলার নব্বই শতাংশ দর্শক, এমন ছবি বোঝেন না। তাতে আপত্তি নেই, কারণ, বেশিরভাগ লোক ভাল কাজ বুঝবেন না, এমনটাই স্বাভাবিক। তা হলে কী এমন ছবি হবে না? হবে। সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়রা আসলে সেই কাজটাই করছেন। আসলে, মুশকিল হল, পায়েল কাপাডিয়া কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেলে ফেসবুক জুড়ে নাচানাচির শেষ থাকে না, কিন্তু একটু অন্যধারার ছবি হলেই সব যায় জলাঞ্জলি। হলে লোক আসে না। এই দ্বিরাচিতা কোথায় রাখি?

বাঘের হামলায় বাবার মৃত্যুর পরে সন্তান ঠিক করে সে যাবে জঙ্গলে। পেটের ভাত জোগাড় করতে। কিন্তু সে না পারে মউলির কাজ, না পারে নাও চালাতে। স্থানীয় জঙ্গলের স্বঘোষিত রাখওয়ালার কাছ থেকে পারমিট পেতে গেলে দিতে হবে অনেকগুলো টাকা। সে টাকা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই। সেই পরিস্থিতিতে একদল পারমিটপ্রাপ্ত মউলির সঙ্গে সে যায় জঙ্গলে। খাতায়-কলমে বেআইনি ভাবেই। সেখানেই সে বাঘের মুখে পড়ে। তাঁকে খুঁজতে সার্চ পার্টি পাঠাতে অস্বীকার করেন জঙ্গলের স্বঘোষিত রাখওয়ালা। পরে, রাজি হন, কেবল মাত্র একটি শর্তে। যুবকের প্রেমিকাকে বিছানা ভাগ করে নিতে হবে তাঁর সঙ্গে। প্রেমিককে প্রাণে বাঁচাতে রাজি হন প্রেমিকা।

গল্প পুরোটা বলে দেওয়া ছবির সমালোচকের কাজ নয়। বরং গল্পটা উস্কে দেওয়া কাজ। সেটুকু বাদে যতটা পড়ে থাকে, ততটাই বেশিরভাগ সিনেমা। নিওরিয়ালিস্ট চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কাজের মূল ধারণাই ছিল জীবনকে স্বাভাবিক নিয়মে ক্যামেরায় ধরা। সত্যজিৎ রায়ও দীর্ঘদিন সেই রাস্তারই পথিক ছিলেন। কিন্তু সিনেমার পর্দায় জীবনকে সেই স্বাভাবিকতায় ধরার উদ্যোগ প্রায় কমে গিয়েছে, বাংলা বাজারে তো কমে গিয়েছেই। সায়ন সেই রাস্তায় হেঁটে এক আন্দোলনের শরিক হলেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে, এই বাংলায় বা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে, কখনও পঞ্জাবে, কখনও দক্ষিণের কোনও রাজ্যে নতুন করে ভারতীয় শৈল্পিক ছবির একটা ধারা ক্রমে শক্তিশালী হচ্ছে নতুন করে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমাদরও পাচ্ছে। সেই পথে সায়ন সাহস করে পা রাখলেন। পা রাখলেন মিছিলে। ছবিতে অনুভব ও শ্রীতমার অভিনয় আলাদা করে নজরে পড়ার মতো। প্রথমত, একেবারে শহুরে জীবনে বড় হয়ে ওঠা দু'টি মানুষের দক্ষিণবঙ্গের গ্রাম্য ভাষা আয়ত্ম করা, সেখানকার চালচলন রপ্ত করা ভীষণই কঠিন কাজ। সেই কাজ নৈপুন্যের সঙ্গে পালন করলেন তাঁরা। চোখে ধরা পড়ল না তাঁদের শহুরে জীবনের গতে বাঁধা ছবি। পরিচালকের নৈপুন্যের পাশাপাশি, সেই কৃতিত্ব প্রাপ্য এই দুই অভিনেতারও। উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই ছবিতে উঠে এসেছে বাংলার লোক ভাবনার কথাও। 

বনবিবি সুন্দরবনের এক পরিচিত চরিত্র। সেই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, গান, পালা। হাজার বছর ধরে সেই গান ও পালার ধারা বহন করে নিয়ে চলেছে জল-জঙ্গল। তাই সুন্দরবনের কোনও গল্প কখনই এই অনুষঙ্গ ছাড়া পূর্ণ হতে পারে না। গানের একাধিক প্রয়োগ এখানে মনোরম, তেমনই আবহের ভাবনাও। কোথাও নাটকীয়তা তৈরির তাগিদে শহুরে আবহ ব্যবহার করা হয়নি। নির্বিঘ্নে এক গ্রাম জীবনের যাত্রা তুলে ধরেছেন পরিচালক। ছবির প্রতিটি পায়ে-পায়ে নিশ্চিত এক আশ্চর্য জীবন কাটানোর সুযোগ করে দিয়েছেন পরিচালক। দর্শক হিসাবে মনে হয়েছে, আমাকে এক অদ্ভুত উত্তরণ দিয়েছেন পরিচালক। আসলে, আমরা যে সুন্দরবনকে দেখে এতদিন ধরে অভ্যস্ত হয়েছি, তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছেন পরিচালক। পর্যটকের দৃষ্টি থেকে সরিয়ে এনেছেন এক নির্দিষ্ট অবস্থানে। সেখানে দাঁড়িয়ে আদুল গায়ে দেখা যায়, জলে কুমির-ডাঙায় বাঘের জীবনকে। শহুরে মানুষরা তাই এক অস্বস্তি পেতে পারেন, সেটুকু আপনার প্রাপ্য। পাপস্খলন করুন, দোআঁশ দেখুন। 




#Bengali Film#Bengali Entertainment News



বিশেষ খবর

নানান খবর

শীঘ্রই আসছে...

নানান খবর

গোয়াতে গ্রেফতার জানি মাস্টার, তামান্নার 'আজ কি রাত'র নৃত্য পরিচালকের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?...

দিনদুপুরে সেলিম খানকে প্রাণনাশের হুমকি বিষ্ণোই গ্যাংয়ের! ঘোমটার আড়ালে 'স্ত্রী'-এর চরিত্রে ছিলেন কোন অভিনেত্রী...

সমাজমাধ্যমে এ কী 'নোংরা' ভুল করলেন অমিতাভ বচ্চন! জানতে পেরেই প্রায় হাতজোড় করে ক্ষমাপ্রার্থনা ...

জলের তলায় ডুব থেকে নৌকাভ্রমণ, কলকাতার কোলাহল থেকে দূরে ছেলের সঙ্গে অলস দুপুরে হইচই প্রিয়াঙ্কার...

১২ বছর পর ফের জুটিতে সইফ-করিনা! ফ্যামিলি ড্রামা না থ্রিলার? কোন গল্প ফুটিয়ে তুলবেন?...

হৃদয়ের ক্যালেন্ডারে 'শ্রাবণ' চিরস্থায়ী, তাই আশ্বিনে আসছে 'দেখেছি তোমাকে শ্রাবণে'...

'দুই শালিক'-এ নয়া অবতারে ফিরলেন সায়ন, বড় চমক নিয়ে হাজির 'যমুনা ঢাকি' খ্যাত চাঁদনি ...

আম্বানিদের বিয়েতে যাওয়ার জন্য টাকা নিয়েছেন বলিউড তারকারা? বিস্ফোরক দাবি অনন্যা পাণ্ডের...

কোনও সন্তানের মা কেন হননি শাবানা আজমি? নেপথ্যের আসল কারণ প্রথমবার ফাঁস বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর...

'সিংহম এগেইন' পিছোনোর কাতর অনুরোধ কার্তিকের, মন কি গললো অজয় দেবগণ-রোহিত শেঠির?...

বিচ্ছেদের বছর ঘুরতেই বড় ঘোষণা সোশ্যাল মিডিয়ায়! কোন ভালবাসায় বাঁধা পড়লেন পরীমণি?...

অভিনয় জীবনে ২৫ বছর পার করতেই বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে করিনা! কী হতে চলেছে অভিনেত্রীর সঙ্গে?...

পতৌদি প্যালেসের সব হিসাব দেখেন শর্মিলা ঠাকুর! খরচ বাঁচাতে কী কাণ্ড করেছেন সইফ? মুখ খুললেন সোহা...

পতৌদি প্যালেসের সব হিসাব দেখেন শর্মিলা ঠাকুর! খরচ বাঁচাতে কী কাণ্ড করেছেন সইফ? মুখ খুললেন সোহা...

বলিউডের প্রায় সব ছবি কেন ব্যর্থ হচ্ছে? চমকে ওঠার মতো কারণ খুঁজে বের করলেন সঞ্জয় গুপ্তা! ...



সোশ্যাল মিডিয়া



07 24